বৃষ্টি Bangla Romantic Sad Story
বৃষ্টি
Writer: Maruf Arman
রাত ১১টা ৩৫বাজে। মুভি দেখছি। মুভি
শেষ হতে এখনও ঘন্টা খানেক বাকি। বাইরে দু এক ফোটা বৃষ্টি পড়তে শুরু করল। টিনের চালে
বৃষ্টি পড়লে কেমন জানি একটা শব্দ হয়। আর এই শব্দে ভালোভাবে মুভি দেখা যাবে না। তাহলে
কি করব এখন? আচ্ছা বৃষ্টিতে ভিজলে কেমন হয়? অনেক দিন বৃষ্টিতে ভেজা হয়নি, তাহলে আজই
বৃষ্টিতে ভিজতে হবে। কোন ফাকা জায়গায় গিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে সিগারেট খেতে আমার আবার
খুব ভালো লাগে। কিন্তু সাথে আবার দু এক ফোটা বৃষ্টি থাকা লাগবে, যেগুল একদম উপর থেকে
আমার গায়ে এসে পড়বে।
আমাদের ম্যাচে যদি ছাদ থাকত তাহলে কোন
কথায় ছিল না, কিন্তু সেটা নাই তাহলে আমাকে একটা ফাকা মাঠ খুজতে হবে। ম্যাচ থেকে কলেজের
ফুটবল মাঠ ৫মিনিটের পথ, কাজেই সেখানে যাওয়া যায়।
১১টা ৫০এর দিকে কলেজ মাঠের উদ্দেশ্যে
ম্যাচ থেকে রওনা দিলাম। আমার কাছে আছে ৭টা সিগারেট আর একটা লাইটার, যেগুলো আছে একটা
পলিথিনের মধ্যে। কারন জোরে বৃষ্টি হলে সেগুলো যেন না ভিজে যাই। চারিদিকে ভালোই অন্ধকার,
তায় লাইটারের আলোই পথ চলছি। আমার লাইটারের আবার একটা সুবিধা আছে, নিচে লাইট আর উপরে
আগুন।
ফুটবল মাঠটা একদম ফাকা। চারিদিকে তাকালে
হালকা হালকা দেখা যায়। মাঠের ঠিক মাঝখানে এসে বসলাম আর মনে মনে ভাবলাম এই ৭টা বিড়ি
না শেষ করে ম্যাচে যাব না।
৬নম্বর বিড়ি খাচ্ছি, কতক্ষন বসে আছি
যানি না। বৃষ্টি থেমে গেছে অনেকক্ষন আগে। হঠাট দেখি একটা লাইটের আলো আমার দিকে এসে
পড়ল। আর আলোর ইশারাই কারা যেন আমাকে ডাকছে। আমি সিগারেট টানতে টানতে তাদের দিকে গেলাম।
-এত রাতে মাঠের মাঝখানে কি কর?
-আপনারা কারা?
-আমরা পুলিশ?
-ও, কিছু করছি না স্যার, বসে বসে সিগারেট
খাচ্ছিলাম?
-এখন কইটা বাজে জানো?
-না, কয়টা বাজে স্যার?
-২টা ৪০, এত রাতে মাঠে বসে সিগারেট
খাচ্ছ নাকি অন্য কোন প্লান আছে? চল থানায় চল?
-স্যার না নিয়ে গেলে হয় না, পরনে একটা
হাফ প্যান্ট আর স্যান্ড গেঞ্জি ছাড়া কিছু নাই? এই অবস্থায় নিয়ে যাবেন?
-বেশি কথা না বলে চল?
পুলিশ মোটর সাইকেলে করে থানায় নিয়ে
আসল। আমাকে হাজতে দেওয়া হল। সেখানে আমি সহ মোট ১১জন আছি। আমি একজনকে জিজ্ঞাস করলাম,
ভাই এখানে কি সিগারেট খাওয়া যাবে? সে বল্ল ওই কোনার দিকে যেয়ে খান? আমি সিগারেট খাচ্ছি,
এমন সময় একজন হাবিলদার এসে বল্ল স্যার তোমাকে ডাকে? আমি সিগারেটটা ফেলে স্যারের রুমের
দিকে গেলাম। দেখে মনে হল এসপি টেসপি হবে?
-বস?
-বলুন স্যার?
-তোমার নাম কি?
-মারুফ?
-থানার মধ্যে সিগারেট খাচ্ছ কেন?
-এমনি খাচ্ছি?
-কি জন্য ধরছে তোমায়?
-কি জন্য জানি না, তবে গভির রাতে কলেজ
মাঠের মাঝখানে বসে সিগারেট খাচ্ছিলাম তায় হবে?
-রাত তো ঘুমের জন্য, রাতে ঘুমাও না?
-রাতে ঘুম আসে না?
-কি কর তুমি?
-পড়ালেখা করি?
-থাক কোথায়?
-কলেজের সাইটে একটা মেচে?
-তোমাকে দেখে তো ভদ্র ঘরের ছেলে মনে
হচ্ছে, তোমার এমন অভ্যাস হয়েছে কেন? প্রেমে ছ্যাকা খাইছ নাকি?
-না স্যার, সে আমাকে বঝেনি?
-তুমি গাজা টাজা খাও নাকি?
-মাঝে মধ্যে, তবে আজ কিন্তু খাই নি?
-ও বুঝলাম?
এমন সময় দেখি স্যারের টেবিলে একজন চা
দিয়ে গেল। আমি স্যারকে বললাম স্যার আমাকে কি এক কাপ চা দেওয়া যাবে? স্যার দেখলাম আমার
দিকে কেমন করে যেন তাকাল। আর মনে মনে হয়ত ভাবল, পাগল নাকি যে আমার টেবিলে বসে আমার
সাথে কথা বলছে অথচ কোন ভয় পাচ্ছে না? স্যার একটু গম্ভির মুখে বল্ল, মালেক সাহেব ওকে
এক কাপ চা এনে দিন? চা খেতে খেতে স্যার আমাকে বল্ল।
-তোমরা আগামি দিনের ভবিষ্যৎ, রাতে ঘুমাবা
আর কোন নেশা করবা না?
-জি স্যার?
-তোমাকে আমার ভালো লেগেছে, কেন জান?
-কেন?
-তুমি সত্য কথা বল?
-আমি অনেক মিথ্যা বলি স্যার, তবে পুলিশদের
কাছে কখনও মিথ্যা বলি না, কারন পুলশদের কাছে মিথ্যা বললে তারা বুঝতে পারে?
-ওকে আই লাইক ইট, তুমি এখন বাসায় যেতে
পার?
-ওকে স্যার থ্যাংক ইউ?
আমি স্যারের রুম থেকে বের হয়ে আবার
স্যারের রুমে ডুকলাম।
-স্যার আপনি যদি কিছু মনে না করেন তাহলে
আপনার কাছে একটা জিনিস চাইব?
-কি বল?
-আমাকে ৫০টাকা দিবেন, আমার কাছে কোন
টাকা নাই?
-৫০টাকা কেন?
-এত রাতে গাড়ি পাওয়া যাবে না, আর আমার
ম্যাচ এখান থেকে ২০-২৫ মিনিটের পথ, আপনি যদি ৫০টাকা দেন তাহলে আমি ১টা চা খাব আর ১প্যাকেট
সিগারেট কিনে খেতে খেতে ম্যাচে যাব?
স্যার একটু হাসল তারপর তার মানিব্যাগ
থেকে ১০০টাকার একটা নোট বের করে আমাকে দিল? আর বল্ল পুরোটা রেখে দও?
আমি মনের আনন্দে থানার সামনের চায়ের
দোকান থেকে এক কাপ চা আর ১টা বেনসন খেলাম। তারপর এক প্যাকেট সিগারেট কিনে টানতে টানতে
ম্যাচের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
onek sundor hoise...
ReplyDeleteby
SMsudipBD.Com