Header Ads

Header ADS

প্রথম দেখা Bangla Romantic Love Story



প্রথম দেখা

Writer: Maruf Arman

 

-মামা যাবেন?

-কই?

-তোমার নানির………!

-কি বল্লা মামা?

-কিছু না। পার্ক এ যাবো। কত নিবেন?

-৩০ টাকা!

-একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে না?

-বেশি বললাম কই? যাবেন তো একা?

-আচ্ছা টিক আছে চলেন।

 

পার্ক এ যাচ্ছি পরির সাথে প্রথম দেখা করতে। তার আগে আমার পরিচয়টা দিয়ে নিই। আমি মারুফ, ইন্টার সেকেন্ড ইয়ার এ পড়ি। পরির সাথে আমার সম্পর্ক প্রায় ৫মাস আগে থেকে। ওর পুরো নাম নুসরাত জাহান পেয়ারি। আমি সংক্ষেপে পরি বলে ডাকি। আমাদের পরিচয়টা হয় ফেসবুক থেকে। দীর্ঘ ৫মাস প্রেম করার পর আজ যাচ্ছি প্রথম বারের মতো দেখা করতে। বীর পুরুষের মতো গেলেও মনের মধ্যে অনেকটা ভয় ভয় লাগছে। যা হওয়ার তা হবে, আগে যেয়ে নিই…!

 

-মামা এসে গেছি নামেন!

-এই নিন আপনার টাকা?

 

রিকশা থেকে নেমে গেলাম ফুল কিনতে। প্রথম বারের মতো দেখা করতে যাচ্ছি একটা গোলাপ হাতে করে না নিয়ে গেলে তো হবে না, আর সাথে ২টা ক্যাটবেরি ও নিয়ে যেতে হবে।

-চাচা গোলাপ কত করে?

-৩০টাকা!

-আরে চাচা এখন তো ভালবাসা দিবসের সময় না ২০টাকা দিচ্ছি ১টা দেন?

-টাকা দও?

 

দুনিয়াতে একটু চালাক না হলে হয় না। ১টা কথা বলে ১০টাকা কমায়ছি।

গোলাপ কেনা শেষ এবার ২টা ক্যাটবেরি কিনলেই হবে।

 

-মামা ২টা ক্যাটবেরি দেন তো মাঝারি সাইজের?

-কত টাকা?

-১২০টাকা!

-এই নেন টাকা?

 

২টা ক্যাটবেরি ১২০টাকা নিলো? কি আর করার আমিতো আর চকলেট খাই না দাম জানবো কি ভাবে?

অনেক সময় হইছে সিগারেট খাওয়া হয়নি, একটা সিগারেট খেয়ে তারপর ডুকব পার্কে।

১টা বেনসন খেয়ে গালে ১টা সেন্টারফ্রুট দিয়ে চিবাতে চিবাতে পার্কের ভিতর রওনা দিলাম। শালার সিগারেট খাইতে যেয়ে ১৫টাকা শেষ হয়ে গেল।

নেভিব্লু কালারের বোরোকা পরে একজন বসে আছে। কি করব বুঝতে পারছি না? ওকে আমি কখনো দেখিনি? আসলে আমিই কখনো ওর কাছে ছবি চায়নি? আর ও নিজে থেকেও দেয়নি!

আস্তে আস্তে মেয়েটার পাশে গেলাম!

 

-পরি! দেখছ আমি তোমাকে চিনতে পারছি?

-কে পরি? আর আপনি কাকে চিনতে পারছেন?

-তুমি পরি না?

-পাগল নাকি?

 

ধুর শালা সকালে কার মুখ দেখে যে ঘুম থেকে উঠেছিলাম! পার্কে এসেই একজনের কাছ থেকে পাগল ডাক শুনলাম। মনে হয় আজকের দিনটা খারাপ যাবে? আর মেয়েটা ভিষন সুন্দর, মনে হচ্ছে আসমান থেকে নেমে এসেছে। মনে মনে ভাবলাম এটাই যদি আমার পরি হত! পকেট থেকে ফোন বার করে পরির কাছে ফোন দিলাম। হঠাৎ দেখি মেয়েটা আমাকে হাত ইশারায় ডাকে?

 

-ফোন দেওয়া লাগবে না? আমিই আপনার পরি?

-কিন্তু তুমি তো প্রথমে বললে যে তুমি পরি না?

-দেরি করে আসার জন্য শাস্তি দিছি? আর আপনি কি সিগারেট খা্ইছেন?

-কই না তো?

-একদম মিথ্যা বলবেন না? আপনার মুখ থেকে সিগারেটের গন্ধ আসছে?

-মানে ১টা খায়ছি?

-আপনি যে বলেছিলেন আর সিগারেট খাবেন না?

-অনেক দিন পরে ১টা খায়ছি তো?

-আর খাবেন না!

-আচ্ছা ঠিক আছে!

-আর আপনি একটু মোটা আছেন, সমস্যা নাই চালিয়ে নিব!

 

কি আর করার, এক অপ্সরীর খপ্পরে পড়েছি। যা বলছে মুখ বুজে সব শুনছি, কোন কথা বলছি না। আচ্ছা মেয়েরা কি সবসময় ছেলেদের ভাল করার দায়িত্ব নেয়? মেয়েরা এমন কেন? ওর উপদেশ শুনতে শুনতে কিছুক্ষন কেটে গেল।

 

-বাদাম খাবে?

-হুমম খাওয়া যায়?

-চাচা ১০০ বাদাম দেন তো?

-এই নাও বাবা?

-কত টাকা?

-৩০টাকা?

-এই নিন টাকা?

 

বাদাম খাওয়া শেষ না হতেই পরি বলল যে ও ফুচকা খাবে? নিয়ে গেলাম ফুচকার দোকানে। দুজনে দু প্লেট ফুচকা খেলাম দাম হল ১৬০টাকা। আসলে ফুচকা ওয়ালাগুলো ছেলে মেয়ে একসাথে দেখলে দাম বেশি নেয়। ফুচকা খাওয়ার পর ওর নাকি ঝাল লাগছে এখন আইসক্রিম খাওয়া লাগবে। ২টা আইসক্রিম ৮০টাকা নিছে। টাকার যে পরিমানে শ্রাদ্ধ হচ্ছে তাতে ১দিনে মেয়েটা আমাকে ফকির বানিয়ে ছাড়বে। কিছুক্ষন দুজনে বসে গল্প করার পর বলল ওর নাকি ক্ষুধা লাগছে?

 

-কি খাবে?

-বিরিয়ানি!

-এত কিছু খাওয়ার পর বিরিয়ানি খাইতে পারবা?

-আমি বিরিয়ানি খাব ব্যাস?

 

দুজনে গেলাম একটি রেস্টুরেন্টে, ও এক প্লেট আর আমি হাফ প্লেট বিরিয়ানি খেয়ে ২টা কোক খেয়ে বেরিয়ে আসলাম। শালা রেস্টুরেন্টে ৩৮০টাকা খরচ হয়ে গেল। আর মেয়েরা যে এত পরিমানে খাইতে পারে আমার জানা ছিল না। এরপর কিচ্ছুক্ষন দুজনে পার্কে বসে ওকে বাসায় যাওয়ার জন্য রিকসায় তুলে দিয়ে রিকসা ওয়ালার হাতে ৫০টাকা দিয়ে ওকে বিদয় করে দিলাম। আর যাওয়ার আগে ওর হাতে ফুল আর ক্যাটবেরি দিলাম। ওর দিকে তাকিয়ে বুঝলাম ও অনেক খুশি হইছে।

যা হওয়ার তা হয়ে গেছে, সব মিলিয়ে খরচ হইছে ৮৮৫টাকা। এক ফ্রেন্ডের কাছ থেকে ৫০০টাকা ধার নিয়ে আমার কাছে মোট টাকা ছিল ৯৬০টাকা। এখন কাছে    টাকা আছে মাত্র ৭৫টাকা। মাথায় কাজ করছে না একটা সিগারেট না খেলে হবে না। মনের কষ্টে সিগারেট খাইতে খাইতে ফোনে একটা মেসেজ আসলো বিকাশ থেকে You have received Tk 1000.00 from……………..! নিচে দেখলাম পরির নাম্বার। তারমানে পরি ১০০০টাকা পাঠিয়ে দিছে। সঙ্গে সঙ্গে ফোন দিলাম পরির কাছে!

 

-হ্যালো!

-কি হইছে বলেন?

-তুমি বিকাশে টাকা দিছ কেন?

-আপনি না বাচেলর, ম্যাচে থাকেন? এত টাকা কই পাবেন?

-তোমার জন্য আমি সব কিছু করতে পারি, তায় বলে তুমি টাকা দিবা?

-মনে করেন ধার দিছি, পরে ইনকাম করতে পরলে আমায় দিয়ে দিবেন?

-তোমায় নিয়ে আর পারা যায় না? এখন রাখছি বাই?

-বাই!

 

মেয়েটা সত্যিই আমাকে অনেক ভালোবাসে, আর আমি তার চেয়ে আরও বেশি ভালোবাসি ওকে!

একটা রিকশা নিয়ে ম্যাচের দিকে রওনা দিলাম। আনন্দে ২টা বেনসন কিনে রিকশা ওয়ালা আর আমি বেনসন টানতে টানতে চলে আসলাম।

2 comments:

Powered by Blogger.